মাগুরা জেলা পরিষদের সাজ্জাদের কর্মকাণ্ডে অসহায় প্রতিবন্ধীরা
মাগুরা প্রতিনিধি:
একসময় যখন বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে পাগল বা বিকলাঙ্গ বলে সমাজে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হতো ঠিক তখনই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল সমাজের এই সুবিধা বঞ্চিত মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। বিশেষ করে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল প্রতিনিয়ত দেশ-বিদেশে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে। তার নিরলস প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বিশেষ স্কুল আর বড়দের জন্য
বিনামূল্যে বিতরণ করছেন বিভিন্ন সাহায্য উপকরণ যাতে করে প্রতিবন্ধী এসব মানুষগুলো স্বাবলম্বী হতে পারে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় একশ্রেণীর সুবিধাবাদী পাতিনেতাদের কারণে প্রতিবন্ধীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সরকার দেশের প্রতিটি জেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের বিনামূল্যে কিছু ইজিবাইক বিতরণ করছে, যাতে করে প্রতিবন্ধীরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে মোটামুটি সচ্ছল ভাবে বেঁচে থাকতে পারে। সম্প্রতি মাগুরা জেলা পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন তুষার জেলার সদর থানার আজমপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী মতিয়ার এর কাছ থেকে দুই দফায় ২০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন একটি ইজিবাইক দেবেন বলে, পরে দুই বছর ঘুরিয়ে ও বিভিন্ন তাল বাহানা করে, তিনি আরো অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন, কিন্তু প্রতিবন্ধী মতিয়ার অতিরিক্ত টাকা প্রদানে ব্যর্থ হলে তিনি উক্ত ইজিবাইক ৫০০০০ টাকার বিনিময়ে জগদল গ্রামের আবু বক্কর এর কাছে হস্তান্তর করেন।
ভুক্তভোগী মতিয়ার জানান “আমি একজন প্রতিবন্ধী, আমাকে দুই বছর ধরে ঘুষ নিয়ে অনেক হেনস্থা করেছে জেলা পরিষদের মেম্বার তুষার, দুঃখ একটাই দুই বছর অপেক্ষার পরও ইজিবাইক তো পেলামই না, উল্টো অনেক গ্যাঞ্জাম করে তার কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করতে হয়েছে।” অন্যদিকে প্রতিবন্ধী বলে মনে হয় না আবু বক্কার যিনি ইজিবাইক পেয়েছেন, তিনি তুষারকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দেয়ার কথা স্বীকার করেন।
চাহিদার তুলনায় সরকারি সরবরাহ কম থাকার ফলে তুষারের মতো মেম্বাররা এসব প্রতিবন্ধীদেরকে নিয়ে রীতিমতো ব্যবসা ফেঁদে বসেছে। এ ব্যাপারে মাগুরা জেলা পরিষদের সদস্য জনাব মোঃ সাজ্জাদ হোসেন তুষার এর মুখোমুখি হলে তিনি বলেন “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ থাকতেই পারে, এগুলো কোন লিখিত প্রমাণ না, তাই আমি অভিযোগ অস্বীকার করলাম”। তিনি নিজেকে যুবলীগ কর্মী বলে দাবি করলেও মাগুরা যুবলীগের আহ্বায়ক জানান সাজ্জাদ হোসেন তুষার নামে মাগুরাতে কোন যুবলীগকর্মী নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলাপরিষদের একজন কর্মচারী জানান তুষার এর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়, তিনি মসজিদ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ টাকা থেকেও কমিশন গ্রহণ করেন।।
জনমনে প্রশ্ন উঠেছে এরকম জনপ্রতিনিধি যদি এমন কর্মকান্ড অব্যাহত রাখে তাহলে জননেত্রী শেখ হাসিনার সমস্ত অর্জন ম্লান হতে সময় লাগবে না। এলাকাবাসীর দাবি তাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। যাহাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন ব্যাহত না হয়।
এদিকে মাগুরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পঙ্কজ কুন্ডু কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান “ব্যাপারটা আমার জানা নেই, অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে আমি সিদ্ধান্ত নেব”।